আজকে আমরা জানবো জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সফলতার গল্প (Bangla: Sofolotar Golpo ) উপায় ও টিপস, যা পিছিয়ে পড়া জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে মনে অনুপ্রেরণা এবং সাহস জোগাতে সাহাজ্য করবে,
প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই অসাধারণ গুপ্ত শক্তির, মানসিক, শারীরিক এবং আত্মিক প্রভূত শক্তির ভান্ডার লুকিয়ে আছে। দুঃখের বিষয় হলো আমরা নিজেদের অত্যন্ত সাধারণ প্রাণী বলে মনে করি। আমাদের মধ্যে কোথায় দিব্য আশ্চর্যজনক শক্তি লুকিয়ে আছে, সে কথা একবারও হবার চেষ্টা করি না।
আমরা সকলেই এক একটা বৃহৎ শক্তির ভান্ডার। ঘোড়ার যদি নিজের শারীরিক শক্তির বিষয়ে জ্ঞান থাকতো তাহলে সে আর আমাদের বহন হয়ে থাকত না, হাতি যদি জানতো তার কত শক্তি তাহলে সে সারা বিশ্বকে নিজের বশবর্তী করে নিত।
যদি নিজেদের শক্তি সম্বন্ধে আমরাও সচেতন হয়ে যায়। তাহলে আমাদেরও কোন দুঃখ, ভয়, চিন্তা, আপত্তি, রাগ দ্বেষ ইত্যাদি কিছুই থাকবে না। আর দুষ্টু মনোবিকার গুলিও আমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবেনা। আর দুষ্টু মনোবিকার গুলিও আমাদের উপর কোন কুপ্রভাব বিস্তার করতে পারবে না।
উন্নতির আকাঙ্ক্ষা রাখাই হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক গুন। তার এগিয়ে চলাই উচিত, কিন্তু সে কাজ তখনই সম্ভব যখন তার মধ্যে সংকল্প শক্তি জেগে উঠবে। সংকল্পের দ্বারা প্রতিটি মানুষের পক্ষেই সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।
Best Sofolotar Solpo অনুপ্রেরণা ও সফলতার স্টোরি
এক ব্যক্তিকে তার স্ত্রী মহামূর্খ বলে গালাগাল করে এবং যথেচ্ছ তিরস্কৃত এবং লাঞ্ছিত করে। স্ত্রীর এই ধরনের ব্যবহারে তার মনে তন্ত আঘাত লাগে। সে তখন তার স্ত্রীকে পরিত্যাগ করে, পরিনত বয়সে বিদ্যাধয়ন করতে শুরু করে। দীর্ঘকাল বিদ্যভাস এবং অটল সংকল্পের জোরে পরবর্তীকালে সংস্কৃতির সে মহাকবি কালিদাস নামে পরিচিত হয়। সমগ্র ভারতবর্ষ তার প্রতিভা ও পাণ্ডিত্য দ্বারা বিস্মৃত হয়ে ওঠে। কেননা তার গুপ্ত মনে কাব্যশক্তির বৃহৎ সম্ভার লুকিয়ে ছিল।
একটি ডাকাত ছিল, সে পথচারীদের লুণ্ঠন ও হত্যা করে আর জীবিকা নির্বাহ করতো। একদিন একজন সন্ন্যাসী তার হাতে ধরা পড়ে। সে সেই সন্ন্যাসিকেও মারতে উদ্যত হয়, কিন্তু সন্ন্যাসী তাকে খুব বিনীত ভাবে বললেন ‘যাদের ভরণপোষণের জন্য তুমি নরহত্যার মত পাপের বোঝা নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছে তারা কি তোমার পাপের ভাগীদার হবে? যাও! তোমার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসা করে এসো।’
ডাকাতটি চলে গেল এবং পরিবারের সকলকে সেই কথা জিজ্ঞাসা করল। কিন্তু তাদের উত্তর শুনে তার চেহারা অন্যরকম হয়ে গেল। তাদের উত্তর ছিল ‘আমরা তোমারা আশ্রিত, তোমার পাপ পণ্যের বিষয়ে আমাদের প্রয়োজন কি?’
তখনই তার জ্ঞানের উদয় হলো। এর পরেই তিনি মহেরছি বাল্মিকী নামে পরিচিত হন। তার গুপ্ত শক্তিগুলি একের পর এক জেগে উঠেছিল। তিনি সারা পৃথিবীতে নিজের বুদ্ধির দ্বারা বিস্মিত করে দিয়েছিলেন।
এই ধরনের কত মহাপুরুষ জন্মগ্রহণ করেছেন, যারা কোনো মানসিক আঘাত পাওয়ার পর, তাদের গুপ্ত মনের সুপ্ত শক্তির জ্ঞান লাভ করে নিজেদের জীবনে অমূল পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হন। এবং সারা বিশ্বকে নিজের প্রতিভার তারা বিস্মিত করে তোলেন।
Success Life Speech
যে চিন্তাধারা মানুষের মনোভূমিতে স্থায়ী প্রভাব বিস্তার করে এবং যার দ্বারা অন্তঃকরণে স্থায়ী ছাপ পড়ে, সেটি পুনরাবৃত্তির কারণে স্বভাবের এক অঙ্গ হয়ে যায়। এই ধরনের চিন্তাধারার নিজস্ব এক বিশেষ মাহাত্ম্য থাকে। এই জাতীয় চিন্তা ধারাকে ক্রমবর্ধমানে সাজিয়ে নেবার পদ্ধতি সম্বন্ধে যাদের জানা আছে, তারা নিজেদের ভাগ্য, দৃষ্টিভঙ্গি এবং পরিবেশকে পরিবর্তন করতে পারে, এবং এই পরিবর্তনের ফলস্বরূপ, জীবন কোন উল্লেখযোগ্য অবস্থা কিংবা ঘটনার সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়,
কোন কিছুর প্রতি যখন তীব্র ইচ্ছা জাগে ওঠে, তখন তার পূর্ণ করার খোঁজ শুরু করা হয়, অতঃপর কোনো না কোনো উপায়ও বেরিয়ে আসে। সেই ইচ্ছা যদি প্রেরণাদায়ক হয়, এবং অন্তর থেকে পূর্ণ করার জেগে ওঠে,
যদি মন প্রাণ এবং জীবনের বাজি ধরা হয় যে, আমি এই বস্তুটি লাভ করবই, তাতে যত বাধাই আসুক না কেন তা পাওয়া সম্ভব। যতই হতাশ করার মতো পরিস্থিতি আসুক না কেন, তবুও নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে, এই ধরনের সংকল্পকে মনের গভীরে সুদৃঢ় ভাবে স্থাপন করে নেওয়া গেলে, অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যাওয়া অত্যন্ত সহজ হয়ে যায়। যে কাজগুলো অন্যদের কাছে কঠিন বলে মনে হয় সেগুলোই আবার সংকল্প কারীদের কাছে খুবই সহজ ও সাধারণ কাজ বলে মনে হয়ে থাকে।
ক্রমাগত এগিয়ে যাওয়ার জন্য ক্রমান্বয়ে নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করা প্রয়োজন ও উন্নতির ধারাবাহিকতা অটুট রাখা দরকার। এগিয়ে যেতে গিয়ে থমকে দাঁড়ানো কিংবা দ্বিধাগ্রস্ত হওয়া উচিত নয়। এটি তখনই সম্ভব যখন আমাদের সংকল্প আমাদের উদ্দেশ্য গুলি অটুট সাহস শ্রদ্ধা এবং শক্তির সাথে ওতপ্রোত হয়ে থাকে। যারা অনিচ্ছা সহকারে উদাসীন হয়ে কাজ করে তাদের অকর্মণ্য বলে গণ্য করা হয়, এবং তাদের পক্ষে বিশেষ সফলতা অর্জন করাও সম্ভবপর হয় না।
আমি যদি ওমর সুবিধা পেতাম কিছু করে দেখাতে পারতাম, এই ধরনের অলীক কল্পনা প্রবণ ব্যক্তিরা কেবল আত্মপ্রবঞ্চনা করে থাকে, ভাগ্য কখনো অন্যের ভরসায় বিকশিত হয় না, পৃথিবীতে অন্য কেউই তোমার ভার বহন করার জন্য প্রস্তুত হবে না। আমাদের যাত্রা আমরা নিজেদের পায়ের সাহায্যেই পূর্ণ করতে পারি।
কোন কাজে অন্যের উপর ভরসা করলে আমাদের জীবন কঠিন হয়ে উঠবে। আমাদের মধ্যে যে মহান চৈতন্য কাজ করছে তার শক্তি অসীম ও অনন্ত। তার আশ্রয় গ্রহণ করলে আত্মবিশ্বাস প্রত্যক্ষ রূপে জেগে উঠবে। তখন আর কারোর উপর নির্ভরশীল হওয়া প্রয়োজন পড়বে না।
আত্মবিশ্বাসই হলো সংকল্পের দ্বিতীয় স্বরূপ। একবার আত্মবিশ্বাস জেগে উঠলে, নিজেদের আত্মবিকাশের কাজও দ্রুত গতিতে পূর্ণতা পাবে। আজ আমরা যে অবস্থায় আছি, নিজেদের জীবনকে যে পরিস্থিতে রেখেছি, তা কেবল নিজস্ব চিন্তাধারারই পরিণাম। আমাদের চিন্তাভাবনা যেমন হবে, ভবিষ্যতও সেই অনুসারে গড়ে উঠবে।
সফলতা ও প্রেরণা মূলক বক্তৃতা
অন্যমনস্কতা উদাসীনতা এবং উদ্যমহীনতার মনোভাব পরিত্যাগ করে, উচ্চস্বরে আরোহণ করার কল্পনা মন জগতকে সচেতন করে তোলে। এর মাধ্যমে সাহস, শৌর্য, কর্মঠতা, উৎপাদন ক্ষমতা, নৈপুণ্য ইত্যাদি গুণের আবির্ভাব হয়। এগুলির মধ্যে শক্তির এমনই গুন লুকিয়ে আছে, যার সাহায্যে প্রতিটি মুহূর্ত অপার সন্তুষ্টি, সুখ এবং আনন্দের রসাস্বাদন করা যেতে পারে।
নিকৃষ্টতা মানুষের মধ্যে খারাপ গুণের সৃষ্টি করে, যার ফলে চারিদিক দিয়ে কষ্ট এবং দুঃখ এসে হাজির হয়। এইজন্যই সংকল্পকে জীবনের উৎকৃষ্টতার মন্ত্র বলে মেনে নেওয়া উচিত। মনুষ্য জীবনের উপযুক্ত গুণ গুলোকে বিকশিত করে তোলার জন্যই এই মন্ত্র প্রয়োগ করা উচিত।
নিজেকে কখনো অসমর্থন, দুর্বল কিংবা অসহায় ভাবা উচিত নয়। সুযোগ সুবিধার অভাবে কেমন করে এগোনো যাবে? এই ধরনের হীন বিচারকে পরিত্যাগ করা দরকার। মনে রাখতে হবে শক্তির উৎস সুযোগ সুবিধার মধ্যে নয় কেবল সংকল্পের মধ্যে সন্নিহিত থাকে।
যদি উন্নত করার এবং এগিয়ে যাওয়ার তীব্র ইচ্ছা থাকে, তাহলে আজ সুযোগ সুবিধার অভাব বোধ করছ কাল দেখবে সে সব নিশ্চিত রূপে বহু দূরে সরে গেছে। দৃঢ় সংকল্পের দ্বারা এবং স্বল্প সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও মানুষ অধিক উন্নতি করতে সক্ষম হয়, এবং সুন্দরভাবে জীবন-যাপন করতে পারে।
প্রদীপ কি কখনো বলে যদি তাকে 10 কিলো মাটি দিয়ে তৈরি করা হতো কিংবা দশ কিলো তেল যদি তার মধ্যে থাকতো, তাহলে সে আলো দিতে পারতো। কিন্তু সে তার সীমিত ক্ষমতা অনুসারে আলো প্রদান করে যায়।
বাস্তবিক দুর্বলতা একটাই, তা হলো আমাদের আত্মবিশ্বাসের একান্ত অভাব। আমরা অন্যকে ধনবান এবং সুপ্রতিষ্ঠিত জীবন-যাপন করতে দেখে তাদের খুব সুখী বলে মনে করি। কিন্তু আমরা যদি তাদের ভিতরের অবস্থা দেখি তাহলে আমাদের ধারণা বদলে যাবে। আমরা হয়তো ভাবি যে মানুষের কাছে অনেক ধন সম্পত্তি আছে, সুখ আছে, এত বৈভব, মহানতা এবং অধিকার থাকা সত্বেও তাদের দুঃখ কিসের?
তাদের উপর ঈশ্বরের খুব কৃপা, কিন্তু আমাদের উপর ঈশ্বরের এত অকৃপা কেন? আমরা ভাবি আমাদের কাছে ঐশ্বর্যের কোন উপকরণ নেই তাই আমরা দুঃখী এবং তাদের কাছে সব রকমের সাধন সামগ্রী আছে তাই তারা সুখী। এটা আমাদের মনের ভ্রম ছাড়া আর কিছুই নয়।
ঐশ্বরিক শক্তি বিপুল ক্ষমতা মানসিক শারীরিক এবং আত্মার ঐশ্বর্যের যে পরিমাণ অংশ তাদের কাছে রয়েছে, বাস্তবে ততটাই কিন্তু তোমার মধ্যে রয়েছে। সব সময় এ কথা স্মরণ রাখতে হবে সতত পরিশ্রম এবং অভীষ্ট সিদ্ধির ভাগ্য তৈরি হয়। জনতার একান্ত ইচ্ছা এবং সাধনার দ্বারাই দেশের উন্নতি হতে পারে। ইচ্ছে প্রবল শক্তি যে নিজের রাস্তা নিজেই খুঁজে বের করে। বাস্তবে প্রারদ্ধ বা ভাগ্য বলে কিছু নেই। মানুষ চাইলেই নিজের ভাগ্য নিজে তৈরি করতে পারে।
বিচার করার ক্ষমতা কার মধ্যে নেই? প্রত্যেক কাজের পেছনে কোন না কোন কারণ থাকে, এ কথা কে না জানে? যারা নিজেদের কল্পপ্রসুত ভূতু প্রেত এবং জীবনের ঝড় তুফানের আশঙ্কায় সর্বদা ভয় ভীত হয়ে থাকে, একমাত্র তারাই তাদের সেই কাল্পনিক ভূতপ্রেত এবং গ্রহ নক্ষত্রের দাস হয়ে পড়ে।
কখনো কঠিন পরিস্থিতির কাছে হার স্বীকার করবেন না। বরং যতই কঠিন পরিস্থিতি আসুক না কেন নিজের মধ্যে ততবেশি ধৈর্য এবং উৎসাহের সঞ্চার করে যেতে হবে। বিভিন্ন ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া আবশ্যক। বিভিন্ন ভাবে নিজেদের কর্মের মধ্যে ব্যস্ত রাখতে হবে, একসময় দেখা যাবে জীবন কোন না কোনভাবে সাফল্য লাভ করবেই।
সংকল্প দৃঢ়তা, ধৈর্য এবং সাহস সম্বল করেই মানুষ জয়ী হতে পারে। যারা কখনো ও সাফল্যের কাছে হার স্বীকার করেনি কোন প্রকার হতাশাকে ধারে কাছে আসতে দেয়নি, যাদের মধ্যে জয়ী হবার প্রবল ইচ্ছা থাকে, যার কাছে উৎসাহী এবং তাদের মনে অসীম ধৈর্য্য আছে, তাদের সংকল্প আজ নয়তো কাল নিঃসন্দেহে সফল হবেই।