আজ এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন গাজরের উপকারিতা ও গুনাগুণ সম্পর্কে কিছু তথ্য, চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক গাজরের প্রয়োজনীয়তা ও উপকারিতা Benefits of carrots গুলো কি কি, ও গাজর আমাদের কি কি কাজে লাগে, এবং নিয়মিত গাজর এর সেবনের ফলে কি কি রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করা যেতে পরে,
Contents List
গাজরের উপকারিতা:
গাজর যে শুধু একটি সুস্বাদু খাবার তা কিন্তু নয়, এটি বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময় করে থাকে, এটিকে কাঁচা ও রান্না যেকোনো অবস্থায় খাওয়া যায়, এটি সাধারণত শীত কালে বেশি উৎপাদন হয়, তবে বছরের যে কোনো সময়ই এটি পাওয়া যায়,
গাজর দিয়ে তৈরি হালুয়া প্রায় সকলেরই পছন্দের একটি খাবার হিসাবে গণ্য, প্রত্যেক বাড়িতেই প্রায় গাজরের হালুয়া তৈরি করা হয়,
১. অ্যানিমিয়া রোগীদের জন্য গাজর
যাদের শরীরে রক্তের মাত্রা কম তাদের জন্য গাজর খুব উপকারী একটি খাদ্য দ্রব্য হিসাবে পরিচিত, গাজরে একাধিক ভিটামিন পাওয়া যায়, এছাড়াও মিনারেল, পটাশিয়াম, সোডিয়াম এর মাত্রা প্রচুর পরিমাণে থাকে,
কোনো ব্যাক্তি যদি দুর্বল হয়ে থাকে তার জন্য গাজর খুব উপকার করতে সক্ষম, গাজরে ভিটামিন A, B, C, এবং ভিটামিন B12 মজুত থাকে, মানব দেহের জন্য এই ভিটামিন গুলোর প্রজনীয়তা অপরিসীম,
গাজরে এমন কিছু উপাদান পাওয়া যায় যা আমাদের শরীরের রক্তের অভাবের ঘাটতি পূরণ করার সাথে সাথে রক্ত সম্পর্কিত অন্যান্য সমস্যা গুলোকেও দূর করতে সহায়তা করে, যেমন আমাদের শরীরে রক্ত প্রয়োজনের তুলনায় যদি বেশি গাড়হ ও পাতলা হয়, তাহলে উভয় ক্ষেত্রেই গাজর খুব ভালো কাজ করে,
রক্তের মাত্রা ঠিক রাখতে যদি নীয়মিতরুপে আধকাপ গাজরের জুস সেবন করা যায় তাহলে রক্ত সম্বন্ধীয় সমস্ত প্রকার রোগ নিরাময় করা সম্ভব,
গাজর দিয়ে বিভিন্ন প্রকার রেসিপি বা সুস্বাদু খাবার প্রস্তুত করা হয়, যেমন গাজরের ক্ষীর, হালুয়া, বরফি, গাজরের তরিতরকারি আরও অনেক কিছু খাদ্যদ্রব্য তরী করা হয়ে থাকে,
যদি আপনি রক্তের মাত্রা বৃদ্ধির জন্য গাজর খেতে চান তাহলে এটিকে না ছিলে আঁশ শুদ্ধ খেতে পারেন, কেবল গাজরের উপরে যে সরু সরু মূল থাকে এগুলোকে বাদ দিয়ে পরিষ্কার করে নিলেই হবে, এতে ভালো ফল মিলবে,
কারণ গাজরের ছালের নীচের অংশে পটাশিয়াম ও সোডিয়ামের আবরণ থাকে, যা আমাদের শরীরের জন্য খুব উপযোগী, যদি আমরা গাজরের ছাল বাদ দিয়ে দিই তাহলে এই দুই উপাদান থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়বো, তাই চেষ্টা করুন ছাল শুদ্ধ গাজর খাওয়ার,
২. ফেস প্যাক
প্রথম পদ্ধতি: গাজরের আরও একটি বিশেষ উপকারিতা হলো ফেসপ্যাক ও ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য গাজরের ব্যবহার করা যেতে পারে, প্রথমে ভালো করে অল্প জলে গাজর সিদ্ধ করে নিয়ে, সিদ্ধকরা টুকরো গুলোকে কোনো গাইন্ডার বা মিক্সচার এবং অন্য কোনো উপায়ে ভালো করে পিষে মাখা মাখা করে নিতে হবে এবং শীতল করে নিনি,
এর পর মুখে বা ত্বকের যে অংশে যেখানে আপনি চান ২০ থেকে ২৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে, ঠাণ্ডা জলে পরিষ্কার করে নিন, সপ্তাহে তিন বার এটি ব্যবহার করতে পারেন, গাজরের এই ফেসপ্যাকটিতে ভিটামিন C থাকে যা ত্বকের জন্য খুব উপকারী,
ফেসপ্যাক তৈরি করার দ্বিতীয় পদ্ধতিটি হলো গাজরের রস বের করে তার সাথে অল্প মাত্রায় লেবুর রস মিশিয়ে নিন, এর পরে এটি চামড়ায় ও ত্বকে ব্যবহার করুন, যদি নিয়মিত ভাবে এই উপায়টি আপনার চামড়ার জন্য ব্যবহার করেন, তাহলে ত্বক পরিষ্কার থাকবে এবং চামড়ার মৃত সেলস গুলো আবার তরতাজা হতে থাকবে,
তৃতীয় পদ্ধতি: যদি ত্বকে কোনো দাগ ছোপ বা পুরনো কোনো দাগ থাকে, সে ক্ষেত্রেও গাজর খুব উপযোগী, এর জন্য গাজরকে কেটে নিয়ে দাগ যুক্ত স্থানে হালকা মেসেজ করার পর, কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখুন, এতে দাগ দূর করতে ভালো ফল মিলবে,
3. ছোট বাচ্চা দের জন্য:
বাচ্চা যখন ছোট থাকে তখন তাকে কোনো ভারী খাবার যেমন ভাত, ডাল, রুটি এসব খাওয়ানো সম্ভব হয় না, এক্ষেত্রে তাকে গাজর দিয়ে কিছু তৈরি করে খাওয়াতে পারেন,
আপনি চাইলে গাজর আর দুধকে একসাথে এর সাথে নুন ও লবণ কোনো কিছুই না মিশিয়ে সিদ্ধ করে নিন, এর এটিকিয়ে পিষে নিয়ে খাওয়াতে পারেন, ছাড়াও গাজরের খুচুরি তৈরি করেও দেয়া যেতে পারে, এতে বাচ্চার বিকাশ ও পুষ্টি ভালো হবে, চোখের দৃষ্টি বৃদ্ধি এবং হাড়ের উপরেরে পেশীর বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে,
4. ওজন কমাতে গাজরের ব্যবহার:
শরীরের বাড়তি ওজন হ্রাস করতে গাজর হলো একটি ভালো উপকরণ, গাজরের স্যালাড বা প্রতিদিনের খাবারের সাথে ও তরিতরকারি সাথে গাজর যুক্ত করুন,
গাজরে ফাইভারের মাত্রা প্রচুর পরিমাণে থাকে, ক্যালরি কম থাকে এবং কোনো ফ্যাট থাকে না, জিঙ্ক, পটাশিয়াম, ভিটামিন, মিনরেল ভরপুর মাত্রায় থাকে, পটাশিয়াম রক্ত সংবহন মাত্রা নিয়নত্রণে সাহায্য করে,
ডাইজেশন ও মেটাবোলিজম এর মাত্রা ঠিক রাখে, যদি পুরনো কোনো পেটের রোগ জনিত সমস্যা থাকে, তাহলে তার থেকে মুক্তি পেতে গাজর ব্যবহার করলে তার থেকে মুক্তি মিলবে, ক্ষুদা মন্দা ও বেশি খিদে পাওয়া দুর করতে গাজর কাজ করে, শরীর কে ফিট রাখতে করতে গাজর একটি মিহাঔষী বলে মনে করা হয়,
ওজন কমাতে ব্যায়াম, আসন ও বিভিন্ন হাল্কা ও ভারী এক্সারসাইজ করার প্রয়োজন পড়ে, আর এর জন্য দেহকে এক্টিভ ও এনার্জেটিক রাখতে হয়, যদি এক্সারসাইজ করার আগে কিংবা এক্সারসাইজ কিছু সমিয় পর গাজরের জুস সেবন করা যায় তাহলে এটি শরীর কে সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে,
আমাদের শরীরের অবাঞ্ছিত ফ্যাট বা চর্বি ক্ষিয় করে এই গাজর, এক কথায় দেহের ওজন কমানোর জন্য গাজর এর জুড়ি মেলা ভার, তাই নিয়মিত গাজর এর ব্যবহার করে শরীরের বাড়তি ওজন হ্রাস করা সম্ভব,
চোখের দৃষ্টি বাড়াতে:
নিয়মিত ভাবে খাদ্য তালিকায় যদি গাজরের ব্যবহার করা হয় তাহলে এটি সুস্বাস্থ্য গঠনের সাথে সাথে চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতেও সহায়তা করে, গাজর আমাদের চোখের জন্য খুবই উপকারী কারণ এতে ভিটামিন A থাকে,
একটা বিয়সের পর চোখের দৃষ্টি শক্তি হ্রাস পেতে থাকে, কোনো ক্ষেত্রে দূরের জিনিস ও আবার অনেক সময় কাছের জিনিস দেখার দৃষ্টি শক্তি কমে আসে, আর এই সমস্যা দেখা দেয় ভিতাক্যারেটিন এর অভাবে, এর এই উপাদানটি গাজরেরে মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে,
সময়ের আগে যদি দৃষ্টি শক্ত কমে আসে আবার অনেক বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় দেখার দৃষ্টি কম, তাহলে এদের জন্য গাজর খুব ভাল কাজ দেবে, চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে আনতে, কোনো একটি নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী যদি সঠিক মাত্রায় গাজরের জুস খাওয়া যায়, দুপুরে ও সকালে ব্রেকফাস্টের পর যেকোনো একটি সময়ে এটি খাওয়া যেতে পারে,
এছাড়াও যাদের চোখ লাল হয়ে যায়, এবং কিছু সময় রদ্দুরে থাকার পর চোখে এলার্জি আসে, ও যাদের চোখে এচিং আছে এদের জন্য ও গাজর খুব অপকারী ভূমিকা পালন করে,
নিয়মিত গাজর সেবন করলে এটি দেহকে ভিতর থেকে স্ট্রং ও সুস্থ রাখতে সহায়তা করে, ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়,
যদি কখনো অ্যাসিডিটি হয় তাহলে যদি একটি গাজর কে এমনি চিবিয়ে খাওয়া যায় তবে অ্যাসিডিটির সমস্যা দুর হবে, আবার গাজর ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করে ও কোলেস্টরল এর ভারসাম্য বজায় রাখে, হৃদরোগ ও ক্যান্সার এর মতো রোগকেও গাজর নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম,