ঘুম বা নিদ্রা দেহ সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে এবং খুবই জরুরী একটি বিষয়,
ছোট বাচ্চা জন্মানোর পর 24 ঘণ্টার মধ্যে 17 থেকে 18 ঘণ্টা ঘুমিয়ে থাকে, কারণ ঘুমের সময় শরীর বিভিন্ন প্রকার নিউরো ক্যামিকাল উৎপন্ন করে যা দেহের বিকাশ ও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে,
বয়স বাড়ার সাথে সাথেই ঘুমের মাত্রা কমে আসতে থাকে, পঞ্চাশ ষাট বছর পর দেখা ঘুমের পরিমাণ একেবারেই কমে আসে,
Bengali Insomnia Causes And Solutions
সাধারণ অবস্থায় একজন মানুষের 6 থেকে 8 ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন পড়ে, কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় 4 থেকে 6 ঘণ্টা ঘুমিয়েও সকল প্রকার কাজ কর্ম নিয়ন্ত্রণ করে নেয়, এদের বলা হয় শর্ট স্লিপারস,
আবার অনেকের ক্ষেত্রে বেশিক্ষণ ঘুমানোর প্রবণতা দেখা দেখা যায় প্রায় 8 থেকে 9 ঘণ্টা, এদের বেশি ঘুমের প্রয়োজন পড়ে, এদের বলা হয় লং স্লিপারস,
তবে একজন সুস্থ ব্যাক্তি 6 থেকে 8 ঘণ্টা ঘুমালেই তার ঘুম সম্পন্ন হয়,
রাত্রে ঘুম না আসার কারণ:
সঠিক সময়ে রাতে ঘুম না আসা বা ঠিক মতো ঘুম না হওয়ার অনেক রকম কারণ হতে পারে, তার মধ্যে প্রধান দুটি কারণ হলো শারীরিক সমস্যা এবং মানসিক সমস্যা,
শারীরিক সমস্যা:
দেখা যায় বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা যেমন, যাদের ডায়েবেটিস, কোলেস্টরল, ব্লাড প্রেসার, থাইরয়েড, এবং হরমনো জনিত সমস্যার কারণে ঘুম ঠিক মতো হয় না,
আবার পোস্ট অপারেটিভ কন্ডিশান অর্থাৎ যদি শরীরের কোনো স্থানে অপারেশন হয়ে থাকে, তাহলে দেখা যায় অনেক দিন পর ওই স্থানে ব্যাথা অনুভূত হওয়া র কারণেও ঘুম কম হয়,
মানসিক সমস্যা:
বর্তমানে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নানান রকমের মানসিক সমস্যা জনিত কারণে মানুষের ঘুম কম হয়, তার মধ্যে ডিপ্রেসন বা ট্রেস হলো একটি কমন সমস্যা, যার প্রভাবে ঠিক মতো ঘুম হয় না,
সৃজফেনিয়া, বাইফোলার ডিসঅর্ডার এরকম কিছু গম্ভীর মানসিক রোগের কারণেও অনিদ্রা দেখা দেয়,
প্রাইমারি ইনসোমনিয়া:
অনেক সময় মানসিক ও শারীরিক কারণ ছাড়াও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে যাকে বলা হয় প্রাইমারি ইনসোমনিয়া,
ইনিশিয়াল ইনসমনিয়া:
শোয়ার পর অনেকে সময় দেখা যায় ঘুম আসতে চায় না, কোনো কোনো ক্ষেত্রে শোয়ার প্রায় এক দেড় ঘণ্টা পর ঘুম আসে, এই অবস্থাকে বলা হয় ইনিশিয়াল ইনসমনিয়া,
যাদের ঘুম ঠিক মতো হয় না তাদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে বিভিন্ন শারীরি ও মনসিকভাবে রোগা গ্রস্থ হয়ে পড়েন, ঘুম কম হওয়ার ফলে ব্লাড প্রেসার, হার্ট ডিজিস, কোলেস্টরল ইনব্লান্স হওয়া, ডিপ্রেসন এই ধরনের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়,
ঘুম আসার উপায় সমধান:
ঘুম ঠিক রাখতে কি করা প্রয়োজন এবং ঘুম না আসার প্রতিকার ও সমাধান গুলো কি কি সে বিষয়ে এখন আমরা জেনে নেব,
ঘুমের জন্য অনেকে বিভিন্ন ওষুধ এর ব্যবহার করে থাকেন কিন্তু এক সময় দেখা যায় এটি অভ্যাসে পরিণত হয়, যদি কিছু ছোট ছোট বিষয় মেনে চলা যায় ও কিছু অভ্যাস এর পরিবর্তন করে নিতে পরি তাহলে ঘুম ভালো করা সম্ভব হবে,
১. ঘুমানোর স্থান কে কেবল ঘুমের জন্যই ব্যবহার করা, অনেক এমন করেন যে যেখানে রাতে ঘুমান অর্থার যে বিছানাতে রাতে ঘুমান সেখানেই বসে টিভি দেখা, খাওয়া, গল্পঃ করা ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করা, এটা না করে যে বিছানায় রাতে ঘুমানো হবে সেটিকে অন্য কোনো সময় ব্যবহার না করে কেবল ঘুমের জন্য রাতের বেলা ব্যবহার করা,
২. ঘুমানোর এবং ঘুম থেকে ওঠার সময় ঠিক করা, আমাদের ঘুম এক প্রকার বায়োলিজিক্যাল ক্লক রেগুলেট করে, মস্তিষ্কে মধ্যে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন গতিবিধি নিয়ন্ত্রিত হয়, তার মধ্যে একটি হলো ঘুম, যেমন ঠিক সময় খাওয়া, সোয়া, এসবের জন্য মস্তিষ্কে সিগন্যাল পৌঁছায়, আর তাই যদি প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানো অভ্যাস করা হয় তাহলে দেখা যাবে ঠিক পার্টিকুলার ওই সময়েই ঘুম চলে আসছে,
৩. রাতে বেশি আহার গ্রহণ না করা, এটা দেখা গেছে যে রাত্রে অনেক বেশি খাবার ফলেও ঘুমের সমস্যা হয়, তাই ভালই ঘুমের জন্য রাতে হাল্কা খাবার গ্রহণ করা উচিত,
৪. রাতে ঘুম ভালো হওয়ার জন্য ব্যায়াম ও শরীর চর্চা করা খুবই জরুরি এবং লাভদায়ক, আমাদের তখনই ঘুমের প্রয়োজন পড়ে যখন আমরাদের শরীর ক্লান্ত হয়ে থাকে, আর শরীরে ক্লান্তি আনতে এক্সারসাইজ এর দরকার, এই এসব ফিজিক্যাল একটিভিটি সকালে করলে ঘুম ভালো হয়,
৫. অনেকে সন্ধ্যার সময় ব্যায়াম, জীবনাস্টিক এগুলো করেলে শরীরের মিধ্যে অ্যারাওজাল্ এক্টিভিটিস বেড়ে যায়, যার কারণে রাতে ঘুম কম হতে থাকে, তাই রাতে ভালো ঘুমাতে হলে সকালে মর্নিং ওয়ারকস, জকিং, প্রাণায়াম, ব্যায়াম এসব করে নিন,
৬. যারা দীর্ঘদিন ধরে অনিদ্রা বা ইনিসমিনিয়া রাতে ঠিক মতো ঘুম না হওয়া সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন, তাদের অবশ্যই কোনো ভালো ডক্টর পরামর্শক নেওয়া দরকার,