এক নজরে জেনে নিন শরীরে কোন ভিটামিন কি কাজ করে, কোন ভিটামিনের অভাবে দেহে কি কি রোগ হয়? এবং কোন খাবারে কি ভিটামিন থাকে?
Contents List
ভিটামিন এর সম্পর্কে কিছু তথ্য
ভিটামিন কি? প্রথমেই আমরা জেনে নেব ভিটামিন কি, ভিটামিন হলো এমন একটি কার্বনিক কম্পাউন্ড যা আমাদের শরীরের মেটাবোলিজম এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্যালরি বিহীন এই যৌগটি বৃদ্ধি, বিকাশ ও বিভিন্ন রোগ জীবাণুর হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে,
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের শরীর নিজে থেকে ভিটামিন তৈরি করতে পারে না, এর জন্য আমরা যে সকল খাদ্য দ্রব্য গ্রহণ করি সেখান থেকেই শরীর ভিটামিন তৈরি করে নেয়,
কিন্তু কিছু এমনও ভিটামিন আছে যে গুলো আমাদের শরীর নিজের থেকে উৎপন্ন করতে সক্ষম, যেমন ভিটামিন D এবং ভিটামিন K. ক্যাসিমির ফাঙ্ক ভিটামিন আবিষ্কার করেন ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে,
ভিটামিনের প্রকারভেদ
দাব্যতা হিসাবে Vitamins কে আমরা দুটি ভাগে বিভক্ত করতে পারি, 1. Water Soluble Vitamin বা জলে দ্রবীভূত ভিটামিন, যেমন ভিটামিন B, C. আর 2. Fat Soluble Vitamin বা ফ্যাটে দাব্য ভিটামিন, যেমন ভিটামিন A, D, E, K
এখন জানবো Water Soluble Vitamin বা জলে দ্রবীভূত ভিটামিন এর সম্পর্কে, এই ভিটামিন শরীরে বেশিদিন স্থায়ী হয় না, অপরদিকে Fat Soluble Vitamin গুলো আমাদের শরীরের মধ্যে জমা হয়ে অনেক দিন পর্যন্ত থাকতে পারে, আর এটি ফ্যাটি টিস্যুতে জমা হয়.
মানুষের দেহে 13 প্রকার ভিটামিনের প্রয়োজন পড়ে, এখানে আমরা প্রতিটি ভিটামিন নিয়ে আলোচনা করবো এবং কোন ভিটামিনের কি কি কাজ, কোন খাবারে কি ভিটামিন থাকে, কোন ভিটামিনের অভাবে কি রোগ হয় তা নিয়ে বিস্তারিত জানবো,
Vitamin A
ভিটামিন A এর রাসায়নিক নাম হলো Retinol (রেটিনল) এটি হলো fat soluble vitamins, এই ভিটামিনের মুখ্য কাজ হলো দেহের মাংস পেশীকে সক্রিয় করা, ও দেহে শক্তি সঞ্চার করা, এই ভিটামিন রক্তে ক্যালসয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
এই ভিটামিনের অভাবে চোখের সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন রাতকানা, চোখে দৃষ্টি কমে আসা এর লক্ষণ,
দুধ, ডিম, পনির, ও সবুজ সব্জীতে ভিটামিন A থাকে। এছাড়াও ভিটামিন A চুলের জন্য খুব উপকারী,
Vitamin B
ভিটামিন B এর প্রকারভেদ গুলো হলো B1, B2, B3, B5, B6, B7, B9, B12.
ভিটামিন B1 এর রাসায়নিক নাম হলো থাইমাইন (Thaimine), এটি ওয়াটার সলিউবল।
এই ভিটামিন মস্তিষ্ক বিকশিত রাখতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, B ১ এর অভাবে বেরিবেরি রোগ হতে পারে।
ভিটামিন বি১ এর উৎস হল সূর্যমুখীর বীজ, সবজি, আলু, ডিম প্রভৃতি.
ভিটামিন B2 – রাসায়নিক নাম রাইবোফ্লেবিন Riboflavin
এটি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী, এই ভিটামিনের অভাবে ত্বক ফেটে যাওয়া, চোখ লাল হোয়া, জিভ শুষ্ক হয়ে আসা, প্রভৃতি সমস্যা দেখা দেয়,
কলা, ডিম, বিম করাই, দই, মাছ, মাংস প্রভিতি খাদ্য দ্রব্যে এই ভিটামিন মজুত থাকে,
ভিটামিন B3: রাসায়নিক নাম – নিয়াসিন, Niacin; এটি water soluble.
শরীরে ব্লাড প্রেসার কন্ট্রোল করতে এই ভিটামিন কাজ করে, এই ভিটামিনের অভাবে চুল পেকে যাওয়া,
খেজুর, টমেটো, গাজর, হলো ভিটামিন B3 এর উৎস।
Vitamin B5 : কেমিক্যাল বা রাসায়নিক নাম হলো প্যান্টথেনিক অ্যাসিড Pantothenic Acid. এটি water soluble ভিটামিন।
চুল সতেজ রাখতে ও অসময়ে চুল পেকে যাওয়া থেকে রক্ষা করে, এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে প্লেগ্রা রোগ দেখা দেয়।
B5 থাকে চিনাবাদাম, মাংস, আলু, টমেটো, ও সবুজ সবজীর মধ্যে,
ভিটামিন B6 – ক্যামিকাল নাম প্যারিডক্সিন- pyridoxine.
এর কাজ হলো সকালের ঘুম থেকে ওঠার পরে দেহের দুর্বলতা দুর করা, ও অনিদ্রা জনিত রোগ থেকে মুক্তি দেয়া,
এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে অ্যানিমিয়া রোগ দেখা দেয়।
মাংস, কলা, সবজির মধ্যে এই ভিটামিন বি6 থাকে,
Vitamin B7 – রাসায়নিক নাম বায়টিন Biotin.
ত্বক ও চুলের জন্য এই ভিটামিন খুব প্রয়োজন,
এই ভিটামিনের অভাবে পক্ষাঘাত, শরীরে ব্যাথা, চুল ঝরে পড়া প্রভৃতি রোগ হয়,
উৎস – ডিমের কুসুম, দুধ, মাংস শাক সবজি.
ভিটামিন B9 – কেমিক্যাল নাম ফলিক অ্যাসিড folic acid.
ত্বক ভালো রাখতে ও বাতের ব্যথার দূর করতে এই ভিটামিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এবং গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এই ভিটামিন খুবই উপকারী,
এই ভিটামিনের অভাব হলে আমাশয় ও রক্তাল্পতা রোগ হয়।
ডাল, সবজি, সূর্যমুখীর বীজে এই ভিটামিন থেকে।
Vitamin B12 – রাসায়নিক নাম সাইনোকাবলামিন cyanocobalamin.
শরীরে রক্ত কমে যাওয়া মুখে আলসার জাতীয় রোগ দেখা দেয় এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে,
দুধ থেকে উৎপাদিত খাদ্য দ্রব্য, মাংস, ও ডিমের মধ্যে এই ভিটামিন বেশি মাত্রায় ভিটামিন বি১২ পাওয়া যায়,
Vitamin C – অ্যাসকরবিক অ্যাসিড Ascorbic Acid.
এই ত্বক ও হাড়ের জন্য খুবই উপকারী একটি ভিটামিন বলে মানা হোয়ে থাকে, গর্ভবতী মহিলাদের এই ভিটামিন বেশি করে নিতে বলা হয়, কোনো ঘা ঠিক করতে এই ভিটামিন বিশেষ কাজ করে, এই ভিটামিনের অভাবে বিভিন্ন ত্বকের রোগ দেখা দেয়।
উৎস – পাতিলেবু, টম্যাটো, কমলা লেবু, প্রভৃতি।
Vitamin D – রাসায়নিক নাম ক্যালসিফেরোল (calciferol)
এটি fat soluble ভিটামিন, এই ভিটামিন মানব দেহে ক্যালসিয়াম উৎপন্ন করে, এবং শরীরের এমিউনি সিস্টেম বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, এই ভিটামিনের অভাবে রিকেট রোগ হয়,
ভিটামিন D আমাদের শরীর নিজেই তৈরি করে নিতে পারে, যেসব খাবারে এটি পাওয়া যায় সেগুলো হলো, দুধের সর, ডিমের কুসুম, এছাড়া সূর্যের রশ্মির কিরণে ভিটামিন D থাকে, যা আমাদের শরীর নিজে থেকেই গ্রহণ করতে সক্ষম।
Vitamin E রাসায়নিক নাম টোকোফেরলস্ (Tocopherols),
এটি fat Soluble Vitamin. শরীরের ইমিউনি সিস্টেমকে মজবুত করতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এই ভিটামিন দারুন ভাবে কাজ করে, ভিটামিন E এর অভাবে প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়, যারা লিভার এর সমস্যা থাকে তাদের এই ভিটামিন বেশি মাত্রায় দেওয়া হয়,
বনস্পতি তৈল, বাদাম, ডিম, দুধ, ও বিভিন্ন সবজি হলো এর উৎস,
Vitamin K – কেমিক্যাল নাম ফিলোকিউনন (phylloquinone) এটি ফ্যাট soluble Vitamin.
এই ভিটামিন ত্বকের জন্য প্রোটিন সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে, ভিটামিন k এর অভাবে রক্ত জমাট বাঁধা উপসর্গ দেখা দেয়,
Vitamin K টম্যাটো, সবুজ সবজীর মধ্যে পাওয়া যায়,